জীবনানন্দ দাশ বলে গিয়েছিলো, আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না; আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে, পৌঁছে অনেকক্ষণ বসে অপেক্ষা করবার অবসর আছে। জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা অন্য সবাই বহন করে করুক; আমি প্রয়োজন বোধ করি না আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে নক্ষত্রের নিচে।
আমি বলেছিলাম, তোমাকে অনন্য হতে হবে না এই সমাজের জন্য। যারা সার্টিফিকেট দিয়ে সব যাচাই করে। অদ্ভুত এই দৌড়ে তোমাকে সফল হতে হবে না বোধহয় এই সমাজের জন্য। শুধু জীবন বুঝলেই চলবে। জীবনের প্রতিটা স্তর খুটে খুটে দেখবে। লিফটে তরতর করে উঠে যাওয়াদের দেখে হয়তো হতাশ হবে। কিন্তু পাশের সিঁড়িতে আমি তোমার ওঠার আওয়াজ পাই। প্রতিটা সিঁড়ি ভেঙে তুমি উপরে উঠছো। বন্ধুরা লিফটে আরামে উঠে গেছে, তোমার একটু কষ্ট হচ্ছে এই যা। গন্তব্য ওখানেই, যেখানে তোমার বন্ধুরা আগেই পৌছে গেছে। শুধু সিঁড়ি ভাঙতে হবে, হাল ছাড়া যাবে না। সিঁড়ি ভেঙে যাও। তোমার পায়ের শব্দ যেন না থামে।
ঠিক ওখানটা তেই সে যাবে যেখানটায় তুমি সিএনজি নিয়ে আগে পৌছুবে। প্রথম হবার হাত তালি টা তুমি পাবে জানি। সিএনজির গুমোট পরিবেশে তুমি রিকশায় উঠে বাতাস গায়ে লাগাবার মজা বুঝবে না। তাই প্রথম হবার হাত তালি না পেলেও, রিকশা থেকে নেমে উৎফুল্ল মনে সে তোমার পাশেই দাড়াবো। সে যে প্রথম হবার দৌড়ে অংশ নেয় না, হেঁটে যাবে সে ওখানেই, ঠিক তোমাদের পাশে। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হবার পদক গুলো তোমাদের শো-কেসেই রেখে দিও, তার কাছে থাকুক বিচিত্র এই পৃথিবী তে বিচিত্র ভাবে বেচে থাকার অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতারা, যা তোমাদের পদক গুলো কে অবাক করবে। বেচে থাকতে চায় তারা ভালো লাগা নিয়ে। এটাই বোধহয় জীবন। আর যদি পাশে না দেখতে পাও তাকে , তবে বুঝে নিও পৃথিবী তে নতুন কোন গন্তব্যের সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে প্রথম হওয়াদের আগে কেউ পৌছে গেছে।
No comments:
Post a Comment